অসাম ফ্লাইট

জানলা দিয়ে তাকিয়ে দূরে চোখ জুড়োলো

মেঘ-ছানারা জড়িয়ে আছে পাহাড় মায়ের চুড়ো।

নীচে তখন দীপর বিলে হাজার পাখি

নীলাচলের পায়ের কাছে লোহিত ওটা নাকি?

কামাখ্যার ওই সোনার শীর্ষে রোদের ঝালর

কাজিরাঙা ঘুমিয়ে আছে মুড়ে সবুজ চাদর।


হঠাৎ দেখি একটু বড়ো মেঝো মেঘের ছানা

প্লেনের কাছে পা ছড়িয়ে করছে তানা-নানা।

ডেকে তাকে শুধোই—‘ওরে, যাবি নাকি সাথে?’

— ‘ রূপসী গেছে মা-ও-বাবা, আইতা বরপেটাতে

      দাদা গেছে পরশুরামে, খুড়ি থাকেন ডিফু;

      সেখান থেকে ফিরল ব’লে, সামনে আছে বিহু।

      বরং তুমি আর ক’টা দিন থেকেই পারো যেতে

      মিঠাপানি বড়াপানি উল্টাপানি খেতে...'

চোখ পাকিয়ে বলি কপট এবং ঈষৎ হেসে

—‘ যা খেতে দাও তাহাই খাবো দিলে ভালোবেসে।

    মজা করো! ওসব আমি ভালোমতন চিনি

    তার চে’ বরং ঘুরিয়ে দিও সৈখোয়া বনানী

    ধ’রে ধ’রে চিনিয়ে দিও মেখলা পাড়ের দ্যুতি...

   দেখি তবে কুম্ভীগ্রামে থামায় কিনা গতি ? ’


ফিরে এসে এখন মনে ভাবছি বসে ঘরে—

যেমন খুশি তেমন হব, যেমন ইচ্ছে ক’রে- 

এমন সুযোগ আসে যদি, মেঘের শরীর পাই;

কেমন মজা রাজ্য-দেশের কোনও বিভেদ নাই।

ছুটে যাব এক নিমেষে আসাম থেকে কেরল

মেঘের সাকিন আর কিছু না, মুক্ত আকাশ কেবল

যে নামেতে ইচ্ছে ডেকো, পদবী সব বাদ

সোনালি মেঘ, সাদা, কালো— মুক্তি জিন্দাবাদ। 

শীতের মেঘ গ্রীষ্মের মেঘ কিম্বা শরৎ-তুলো

পাসপোর্ট ভিসা ইনার-লাইন সবার ঘরে ধুলো। 


Comments