ন্যাচারাল, অতি স্বাভাবিক


সাইরেন চিল্লাচ্ছে খুব
আলোর ঝিলিকে ধাঁধা
অ্যাম্বুলেন্সের মাথা
উৎসব শেষ হ’ল
কী যেন নির্ণয় হ’ল
তরী ভিড়ে গেল শস্ত্রের আগায়।
অক্সিজেন ঢুকে আছে নলে
জলের লবণ যায় সূচ বেধা
ধমনী শিরায়।

এই তো বিনিময়ে পাওয়া
এই তো দাওয়াই, প্রতিদানে —

বড়ো উৎসব চারিদিকে
ধূমধাম খুব
রঙিন আবির ঝড়
মুখ চেনা ভার।
জরুরি বিভাগে ভিড়
সকলে আসে না, কেউ কেউ
এসে উঠতে পারে...

প্রতিবাদী, নিমকহারাম, বিরোধী
এসবই প্রাপ্য ওদের
শালা—
কত ধানে কত চাল, খাও!
কোন কাছারিতে যাবে, যাও

সব শুনশান, শিশিরের শব্দের মতন
রক্তপাত, আশ্রুপাত হয়।
নীরবতা খান খান করে
সেবা গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স বলে —
তফাৎ যাও, তফাৎ যাও

*
মিথ্যে নয়
মিথ্যে নয়
ঝুটা হ্যায়
এই রাত
এই হতাহত
নিশুতি, নিরস্ত্রের হাহাধ্বনি

যারা খুব ভয়ে ছিল
টিকটিকিতেও চমকাতো
তারা আজ নির্ভয়!
কী আলো এসেছে আহা
জন্মান্ধের চোখে!

*

কে দেখে নিশ্চিত করে?
বাইরে দেখা চোখের আলোয়—
শরীরের এত ‘আপন আলো’
হ্যালো, জ্যোতি এত সকলের
রোদচশমা বিকোচ্ছে ভালো
বিদেশি ছাপের।

*
ছাপ!
ওসব সেকেলে!
টেপো, দাবাও
এই হ’ল যুগের বোতাম।
কেন যে ছাপ্পার তবু
বিকল্প কিছু হল না, হায়!

পশুপাখি, সরীসৃপ, উভচর
বৃক্ষরাজি, ফুল, ফল, লতা শতখানা...
পরিবেশবাদীরা কানা
দেখেও দেখেনা এসব
কত যত্নে সংরক্ষিত আছে
ব্যালট বাগানে, অভয়ের অরণ্যে
তারা নির্বিঘ্নে চরে, বাড়ে
কমপ্লান খায়, হাড় মজবুত করে
পুষ্টিচিন্তাহীন, বিলাসীহাওয়া
লাগে বাহারি চেহারায়।

মায় ধরণীর ক্ষুদ্র এক সংস্করণ
আছে এই নোয়ার নৌকায়!

*
নৌকা নয়, থুড়ি
তরী—
অন্নপূর্ণা, ঈশ্বরী—
দুধভাত, অপ্সরী
যেন তেন একবার
শুধু একবার যেন তরি
সোনার সেঁউতি—

তুফান কত দরিয়ায়!
কত পেশিশক্তি লাগে!
কত দূরদৃষ্টি, ক্রুরদৃষ্টি!
হাওয়া বুঝে পাল তোলা!

     সাধারণ বোঝে না এসব
পাবলিক পাবলিক...

এরা কী বুঝেছে কখনও?
দেখেছে?
ক্ষমতার মরীচিকা
লোভনীয় চিক্‌-চিক্

*
ঠিক ঠিক।
দু’চারটে অ্যাম্বুলেন্স
এভাবে ছুটে যাবে
সমস্ত ভোটের শেষে
কখনও একটু বেশি
কখনও আধিক।
এত বড়ো গণতন্ত্র
এত বড়ো দেশ!

এসব সাধারণ বিষয়
বড়ো ন্যাচারাল


অতি স্বাভাবিক।
   ---

Comments